Get the Latest News & Videos from News24 > লাইফস্টাইল > মাস্টারশেফ অস্ট্রেলিয়ার সেরা ৪-এ বাংলাদেশি কিশোয়ার

অনলাইন ডেস্ক: মাস্টারশেফ অস্ট্রেলিয়ার ১৩তম আসরে সেরা ২৪ এ জায়গা করার মাধ্যমে যাত্রা শুরু করে তুমুল প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে বর্তমানে সেরা ৪ এ উঠে এসেছেন বাংলাদেশি-অস্ট্রেলিয়ান কিশোয়ার চৌধুরী।

তিনি বাংলাদেশের নাগরিক। কিন্তু কাজের সূত্রে থাকেন অস্ট্রেলিয়ায়। আর সেখানেই ‘মাস্টারশেফ’ রিয়েলিটি শোয়ে অংশগ্রহণ করেন বাঙালি এই তরুণী। আর সেই প্রতিযোগিতায় এখন পর্যন্ত বিভিন্ন রকমের রান্নার পদ করে খাইয়েছেন বিচারকদের। অস্ট্রেলিয়ার এই ‘মাস্টারশেফ ’ রিয়েলিটি শোতে কিশোয়ার বারবার তার রান্নার মধ্য দিয়ে বিচারকদের মন জয় করেছেন। মাছের ঝোল খেয়ে অস্ট্রেলিয়ান বিচারকরা তো প্রশংসায় পঞ্চমুখ। অবশ্যই এটা বাংলার জন্য অত্যন্ত গর্বের ব্যাপার।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে যা নিয়মিত এবং স্বাভাবিক খাবার, সেগুলোই কিশোয়ার একটু ভিন্ন আঙ্গিকে উপস্থাপন করেছেন। তার রান্নার তালিকায় ছিলো খিচুড়ি, শিম ভর্তা, চিংড়ি ভর্তা, মাছের ঝোল, ঘিয়ে ভাজা পরোটা, খাসির ঝোল, বেগুন ভর্তা, মাছ ও কাঁচা আমের টক, মাছ ভাজা, মাংসের কালাভুনা ইত্যাদি। তবে খাসির ঝোল রান্না করাটা তার জন্য ছিলো বেশ চ্যালেঞ্জিং। ১৪ রকমের মাংস থেকে যে কোনো একটি নিয়ে রান্না শেষ করার নির্দেশনা ছিলো মাত্র ৭৫ মিনিটের মধ্যে। কিশোয়ার নিয়েছিলেন খাসির মাংস। নিজস্ব পদ্ধতিতে রান্না শেষ করেন মাত্র ৩৫ মিনিটের মাথায়। মাংসের সাথে পরিবেশন করেন ঘিয়ে ভাজা পরোটা।

No description available.

দেশের বাইরে থাকলেও কিশোয়ার ভীষণ রকমের ফুচকাপ্রেমী। সময় পেলেই বেরিয়ে পড়েন ফুচকা খেতে। অথবা বাড়িতে নিজেই তৈরি করেন তার পছন্দের এ সকল খাবার। ফুচকা এবং সমুচার মত মুখরোচক এ খাবারগুলোকেও মাস্টারশেফের মঞ্চে নিয়ে এসেছেন তিনি। যদিও বাংলাদেশের প্রচলিত ফুচকা ও সমুচার রেসিপির চাইতে তার রেসিপি ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন।

No description available.

বাংলাদেশের মানুষের কাছে খিচুড়ি অন্যতম একটা জনপ্রিয় খাবার। এ দেশের মানুষের মন আর আবহাওয়া দুটোই যদি একত্রে ভালো থাকে তাহলে খিচুড়ি একেবারে জমিয়ে দেয় পরিবেশ৷ কিন্তু, বাইরে! সেই কিন্তুকেও হার মানিয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কিশোয়ার। জমজমাট এই খিচুড়ির সাথে বেগুন ভর্তা আর মাছ ভাজা প্ল্যাটার পরিবেশন করেছেন বিচারকদের সামনে। এই খিচুড়ি-বেগুন-মাছের মজাদার কম্বিনেশন দিয়েও কুড়িয়েছেন বিচারকদের সীমাহীন প্রশংসা ও পেয়েছেন অফুরন্ত ভালোবাসা।

No description available.

দেশীয় খাবারের ঐতিহ্যকে তুলে ধরতেই জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানটিতে অংশ নিয়েছেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোতে শুরু থেকে ব্যাপক সাড়া পড়েছে তাকে নিয়ে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও তাকে সমর্থন করছেন অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশিরা। কিশোয়ারের হাতে বাংলাদেশের নানা স্বাদের ঐতিহ্যবাহী পদ তৈরি দেখা যায় আন্তর্জাতিক এই প্লাটফর্মে।

‘মাস্টারশেফ অস্ট্রেলিয়া’র চূড়ান্ত পর্বে বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত কিশোয়ার

অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া রাজ্যের মেলবোর্নের বাসিন্দা কিশোয়ার চৌধুরীর। তার জন্ম ও বেড়ে ওঠা অস্ট্রেলিয়াতেই। তিনি মেলবোর্নের মোনাশ ইউনিভার্সিটি থেকে কমার্সে স্নাতক করা। কিশোয়ার লন্ডনের ইউনিভার্সিটি অব আর্টস থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন। বর্তমানে নিজেদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বিজনেস ডেভেলপার হিসাবে কাজ করছেন। অস্ট্রেলিয়ায় রাষ্ট্রীয় সম্মাননা পাওয়া এবং সমাজসেবার জন্য বিশেষভাবে পরিচিত মুখ বাংলাদেশি ব্যবসায়ী কামরুল হোসাইন চৌধুরী ও লায়লা চৌধুরীর মেয়ে কিশোয়ার।

No description available.

এই অনুষ্ঠানের বিচারকদের প্রত্যেকের রয়েছে বাস্তব অভিজ্ঞতা। এরা অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে জীবন থেকে। অনুষ্ঠানের তিনজন বিচারক জক জনফ্রিলো, মেলিসা লিওং আর অ্যান্ড্রু অ্যালেন।

বিশ্বের রান্না বিষয়ক অন্যতম জনপ্রিয় টেলিভিশন রিয়েলিটি শো মাস্টারশেফ অস্ট্রেলিয়ার ত্রয়োদশ আসরের মূল পর্ব শুরু হয় ২০ এপ্রিল। নর্দার্ন টেরিটরিতে চলছে এই প্রতিযোগিতা। বাছাইপর্ব পেরিয়ে ২৪ জন অংশ নিয়েছিলো অনুষ্ঠানটির চূড়ান্ত পর্বে। সেখানেই ছিলেন ৩৮ বছর বয়সী বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কিশোয়ার চৌধুরী। বাছাইপর্বে কিশোয়ার চৌধুরী রান্না করেছিলেন বাংলাদেশি পদ। সেই রান্নার ঝলক দেখানো হয়েছে প্রথম পর্বে। বাছাইপর্বে কিশোয়ার মাছ আর কাঁচা আমের টক তৈরি করেছিলেন। যা দেখে বিচারকেরা কেবল মুগ্ধ হননি; বরং তার স্বাদও পছন্দ করেছেন অনেক।

No description available.

বিশ্বের রান্না বিষয়ক টেলিভিশন রিয়েলিটি শোর মধ্যে মাস্টারসেফ অন্যতম। বিশ্বের প্রায় ৪০টি দেশ তাদের নিজস্ব মাস্টারশেফ আয়োজন করে থাকে। বিশ্বে মাস্টারশেফ অনুষ্ঠানগুলোর মধ্যে ‘মাস্টারশেফ অস্ট্রেলিয়া’ জনপ্রিয়তার দিক থেকে রয়েছে তালিকার শীর্ষে। এটি প্রতিযোগিতা মূলক রান্নার গেম শো। এখানে অপেশাদার রন্ধন শিল্পীরা জয়ের জন্য প্রতিযোগিতা করেন। যুক্তরাজ্যে অনুষ্ঠানটি বানানো হয় ১৯৯০ সালে। বিবিসির জন্যে ২০০৫ সালে অনুষ্ঠানটি পরিবর্তন আর পরিবর্ধন করে সাজানো হয়। এই নতুন রূপে সাজানো অনুষ্ঠানটির কাঠামো আন্তর্জাতিকভাবে বিভিন্ন দেশে বিক্রির পরিকল্পনা করা হয়।

নিউজ২৪.ওয়েব / ডেস্ক /ব্রিজ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *