প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে থাকছে না কোটা

অনলা্ইন ডেস্ক:- থাকছে না কোটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগে। সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রাথমিকে সহকারী শিক্ষকদের পদ ১৩ তম গ্রেড ঘোষণা হওয়ায় কোটা তুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে নির্ধারিত ৬০ শতাংশ নারী, ২০ শতাংশ পুরুষ এবং ২০ শতাংশ পোষ্য কোটা বহাল থাকছে।

এ ধারাবাহিকতায় সেপ্টেম্বরের শেষে অথবা অক্টোবরের প্রথম দিকে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানা গেছে।প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর (ডিপিই) সূত্র মতে, সারাদেশে ২৫ হাজার ৩০০ জন প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষক ও ১০ হাজার শূন্যপদে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছেে।আর তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করতে ওয়েবসাইট আধুনিকায়ন করা হচ্ছে।

প্রাক-প্রাথমিক ও সহকারী শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে ডিপিই থেকে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে।এতে আগের সব কোটা বাতিল করা হয়েছে। কোটাগুলো হলো- আনসার-ভিডিপি, মুক্তিযোদ্ধা, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী, প্রতিবন্ধী ও জেলা কোটা। সহকারী শিক্ষকদের যোগদানের পর ১৩তম গ্রেডে উন্নীত করায় কোটা বাতিল করা হয়েছে। নির্ধারিত ৬০ শতাংশ নারী, ২০ শতাংশ পুরুষ এবং ২০ শতাংশ পোষ্য কোটা বহাল হয়েছে।

একজন প্রার্থীর এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার রোল এবং রেজিস্ট্রেশন নম্বর দিয়ে আবেদন প্রক্রিয়া অনলাইনে সম্পন্ন করতে হবে। আবেদনকারী নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে স্নাতক (সম্মান), স্নাতক (পাস) বা সমমান ডিগ্রি করা হয়েছে। গত বছর অনলাইন আবেদন ফি ১৬৬ টাকা হলেও এবার আবেদন ফি বাড়ানো হয়েছে । বুয়েট ও টেলিটক মোবাইল কোম্পানির সহায়তায় আবেদন গ্রহণ, কেন্দ্রে প্রশ্নপত্র পাঠানো, খাতা মূল্যায়ন ও ফল প্রকাশ করা হবে। চলতি মাসের শেষে অথবা অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। অনলাইন আবেদনের জন্য এক মাস সময় দেয়া হবে।

এ এম মনসুর আলম ১৩সেপ্টেম্বর রবিবার জানান,“নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রাক-প্রাথমিক স্তরে ২৫ হাজার ৩০০ জন নিয়োগ দেয়া হবে। এটি প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন প্রকল্প-৪ (পিইডিপি) এর আওতাভুক্ত হলেও প্রকল্পের মেয়াদ শেষে এ স্তরের শিক্ষকদের রাজস্বখাতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এছাড়া শূন্য সব পদে আরও ১০ হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার চিন্তাভাবনা রয়েছে। দুই স্তরে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অধিদফতর থেকে পাঠানো হয়েছে। এটি অনুমোদন করে চলতি সপ্তাহে পাঠানো হবে। এরপর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশসহ নিয়োগের পরবর্তী কাজ শুরু হবে। সর্বশেষ সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে সব কোটা বাতিল করা হয়েছে। বর্তমানে প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা অনুযায়ী নারী, পোষ্য ও পুরুষ কোটা বহাল থাকবে। সে অনুযায়ী লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হবে।”

জানা যায়,প্রাক-প্রাথমিক সময়সীমা ২ বছর ও ভর্তির ক্ষেত্রে ৪ বছর বয়সসীমা করে গত ১৬ জুন প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাব পাঠায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাক-প্রাথমিক স্তর ৫ বছরের বেশি বয়সী শিশুদের জন্য এক বছর মেয়াদি শিক্ষা প্রদান করা হচ্ছে। এ স্তরে অর্জিত সাফল্য ও অভিজ্ঞতা অর্জনে চার বছরের বেশি বয়সী শিশুদের জন্য দুই বছর মেয়াদি করতে একটি প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে এ প্রস্তাবের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। বর্তমানে এ স্তরে শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম শুরু হতে যাচ্ছে।

এদিকে কোটা কমানোর দাবিতে ২০১৮ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীরা কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলেন। এতে নেতৃত্ব দেয় ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’ নামের একটি সংগঠন। একপর্যায়ে সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি পর্যালোচনা করতে তৎকালীন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলমের নেতৃত্বে ২০১৮ সালের ২ জুন একটি কমিটি গঠন করা হয়। ২০১৮ সালের ৩ অক্টোবর প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল করে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়ার প্রস্তাব অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। এর ঠিক পরদিন নবম গ্রেড ও দশম থেকে ১৩তম গ্রেডে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে বিদ্যমান কোটা বাতিল করে আদেশ জারি করেন জনপ্রসাশন মন্ত্রণালয়।

এরপর সরকারি চাকরির নবম থেকে ত্রয়োদশ গ্রেড পর্যন্ত অর্থাৎ প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদে কোনো কোটা না রেখে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের নিয়ম চালু করতে ২০১৮ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কাছে সুপারিশ জমা দেয় কমিটি। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পাওয়ার পর মন্ত্রিসভার বৈঠকে তোলার পর তা পাস হয়। সরকারি চাকরিতে প্রথম গ্রেড পর্যন্ত সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনো কোটা থাকবে না বলে গত ২০ জানুয়ারি সিদ্ধান্ত দেয় মন্ত্রিসভা।

নিউজ২৪.ওয়েব/ডেস্ক/রূপা