The main component of a healthy environment for self esteem is that it needs be nurturing. It should provide unconditional warmth.
নিউজ24 ডেস্ক: বৌদি ফাঁস করায় পালিয়ে বেঁচে গিয়ে পরে কলসকাঠির জমিদারী পায় জানকী বল্লভ’
*দ্বিতীয় পানাম নগরী বাকেরগঞ্জ উপজেলায় কলসকাঠির ১৩ জমিদার বাড়ির কিংবদন্তি ইতিহাস নিয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন।
“ধান, নদী,খাল এর সাথে একাকার হয়ে আছে বরিশাল। সেইসাথে যুক্ত হয়েছে বিশাল শালগাছ,নারিকেল বাগান,বিখ্যাত বড় লবনদানা,ফলজ বৃক্ষ ও শষ্যভাণ্ডার সমৃদ্ধ ‘ধন্য ধান্য পুষ্প ভরা বরিশাল’।
কিংবদন্তি আছে,দেশি-বিদেশি বনিকদের কাছে
এইসব কারণেই বরিশালের পাদদেশে বাকেরগঞ্জের তুলাতলি নদীর পূর্বপারে দ্বীপ সাদৃশ্য কলসকাঠি বানিজ্যিক বন্দরের মর্যাদা লাভ করে। শতবছর পরে হলেও যোগাযোগ সুবিধা বঞ্চিত এ অঞ্চলে উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে।
বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০১৯ সালে তুলাতলি নদীর উপর একমাত্র
‘তুলাতলি সেতু’ নির্মিত হওয়ার পর দুই পারের মানুষের দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন পুরন হলো।
একইসাথে ৪ টি উপজেলার বৃহৎ জনগোষ্ঠী ফেরি নির্ভরতা থেকে চিরদিনের জন্য মুক্তিলাভ করে।
বরিশাল শহর থেকে সড়কপথে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে প্রাচীন জনপদ কলসকাঠীর
চারপাশে তোলাতুলি নদী ও সরু স্রোতস্বীনি খাল। চারপাশে ঘন সবুজের সমারোহে অপরুপ মায়াময় পরিবেশ।
প্রায় ৩০০ বছরের ইতিহাস জড়িয়ে কলসকাঠির ১৩ জমিদারের এই জনপদ।।
সম্ভবতঃ খাল,বিল নদী বন্দরকে ঘিরেই ১৭০০ সালের গোড়ার দিকে বানিজ্যিক নগরী হিসেবে জমিদার জানকি বল্লভ রায় চৌধুরী কলসকাঠির গোড়াপত্তন করেন।
https://www.facebook.com/subash.saha2/videos/3425945320829992
অধুনা পার্শ্ববর্তী গারুড়িয়া ইউনিয়নের জমিদার জানকী বল্লভ রায় চৌধুরী ছিলেন ‘গারুড়িয়ার’ জমিদার রামাকান্তের পুত্র।
জানকী বল্লভ রায় চৌধুরীরা ছিলেন দুই ভাই।
বড় ; ‘ভাই রাম বল্লভ।’
ছোট ভাই ; ‘জানকী বল্লভ।’
কথিত আছে, ছোট ভাই জানকী বল্লভকে হত্যার চক্রান্ত করেছিলেন বড়ভাই রাম বল্লভ। জানকী বল্লভ তার বৌদির মাধ্যমে হত্যার বিষয়টি জানতে পেরে রাতের আধারে গারুড়িয়া ত্যাগ করে মুর্শিদাবাদ চলে যান।
সেখানে তিনি নবাবের কাছে সমস্ত ঘটনা খুলে বলেন এবং নবাব তাকে অরংপুর পরগনার জমিদার হিসেবে নিয়োগ করেন। যতদূর পর্যন্ত ভাটা তত দূর পর্যন্ত জানকী বল্লভের পাট্টা ছিল। জমিদারী পেয়ে তিনি কলসকাঠীতে এসে বসতি স্থাপন করে।
*কলসকাঠীর তের জমিদার মূলত জানকী বল্লভের পরবর্তী বংশধর।*
এভাবেই এই জনপদ ১৩ জমিদারের বানিজ্য নগরী পরিচিতি পায়।
প্রায় তিনশ বছরের বেশি সময় ধরে বংশপরম্পরায় ১৩ জমিদার বাড়ির ক্ষয়িষ্ণু অস্তিত্ব এখনও কালের স্বাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
প্রত্নতত্ব অধিদপ্তরের চোখের আড়ালেই স্বর্ণালী একটি ইতিহাসের শেষ অস্তিত্বটুকুও বিলুপ্ত হওয়ার পথে।
পূর্বপুরুষের জমিদারির বিশাল স্থাবর সম্পদের কিয়দাংশ আকড়ে নিঃস্ব বংশধরদের গুটিকয়েক জন অর্থনৈতিক দুরাবস্থার মধ্যে বেঁচে আছেন।
প্রতাপশালী জমিদারদের এই জনপদের নিরঙ্কুশ হিন্দুজনগোষ্ঠীর সিংহভাগ দেশত্যাগ করে চলে গেছেন।
বর্তমানে কামার-কুমার মৃৎশিল্পী,নরসুন্দর,নমঃসুদ্র সহ নিন্মবর্ণের জনগোষ্ঠীর লোকজন আদি পেশার উপর নির্ভর করে কোনরকমে টিকে আছে।
হাতে গুনা কয়েকটি ব্রাম্মন ও বনিক শ্রেণীর সাহা সম্প্রদায়ভূক্ত পরিবার শিক্ষা দিক্ষায় অগ্রসর স্বাচ্ছন্দ্য জীবন যাপন করছেন।
প্রকৃতপক্ষে কলসকাঠী পূর্ণাঙ্গ একটি প্রাচীন শহর।
বলা যায় অনেকটা নারায়ণগঞ্জ জেলায় অবস্থিত মোগল সাম্রাজ্যের সোনারগাঁওয়ের পানাম নগরের মতো।
এখানে জমিদার বাড়িগুলো বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে আছে। কর্তৃপক্ষের অবহেলায় প্রভাবশালীরা অবশিষ্টাংশও জাল জালিয়াতির মাধ্যমে গ্রাস করতে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে।
এই পরগণার কোন কোন এলাকায় দরিদ্র হিন্দুদের ঘর বাড়ি ও মন্দির সংস্কারের অভাবে জরাজীর্ণ।
প্রাচীনতম মন্দিরে মূল্যবান কোষ্ঠীপাথরের কিছু মূর্তি অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে।
কলসকাঠিতে প্রতি বছর নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে উৎযাপিত হয় ঐতিহ্যবাহী জগদ্বাত্রী পূজা।
এখানে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ দূর্গা পূজার বড় কোন আয়োজন,আনন্দ-উৎসব না হলেও জগদ্ধাত্রী পূজা ঘিরে কলসকাঠী পরিণত হয় লাখো মানুষের মিলনমেলায়।
দূর দুরান্তের গ্রাম-গঞ্জ থেকে এই পূজায় অংশ নিতে লাখো মানুষের ভীর সামলাতে প্রশাসনের আগে থেকে বিশাল প্রস্তুতি নিতে হয়।
https://www.facebook.com/100002436732253/videos/pcb.3425952617495929/3426047030819821
কিভাবে যাওয়া যায়:
বাকেরগঞ্জ উপজেলা সদরের সাহেবগঞ্জ খেয়া পার হয়ে মোটর সাইকেল, রিকশা বা ভ্যান যোগে প্রায় ৩ কিঃ মিঃ দূরত্বে কলসকাঠী বাজারের কিছুটা আগে জমিদার বাড়িটির অবস্থান।।
নিউজ24 ডেস্ক/সংবাদদাতা/হৃদয়