Get the Latest News & Videos from News24 > জাতীয় > দুই ডোজ ভ্যাকসিনে দীর্ঘস্থায়ী অ্যান্টিবডি তৈরি হবে

অনলাইন ডেস্ক: অণুজীব বিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. বিজন কুমার শীল ধারণা করছেন, দেশে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের তীব্রতা আগের চেয়ে অনেকটা কমলেও কিছু দিন পর আবার বাড়তে পারে। তিনি বলেন, সামনে দেশে করোনা সংক্রমণ আবার সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে। এর পর থেকে তা কমতে থাকবে। শীতের আগেই দুই-একটি প্রত্যন্ত এলাকা ছাড়া সিংহভাগ অঞ্চলেই সংক্রমণ কমে যাবে। তবে করোনা একেবারে ধ্বংস করার একটিই প্রক্রিয়া, তা হচ্ছে- ভ্যাকসিন। তাই এর জন্য এখনই চাহিদা দিতে হবে। একটি ভ্যাকসিন যখনই সফল হবে, তখনই তার চাহিদা বেড়ে যাবে। ফলে এখনই চাহিদাপত্র না দিলে পরে পাওয়া যাবে না।

দেশের বর্তমান করোনা পরিস্থিতি নিয়ে আমাদের সময়ের সঙ্গে টেলিফোনে আলাপকালে এসব কথা বলেন করোনা ভাইরাস শনাক্তের র‌্যাপিড ডট ব্লট কিট উদ্ভাবন করা এই প্রখ্যাত বিজ্ঞানী।

দেশবাসীকে আতঙ্কিত না হয়ে সতর্কভাবে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি মোকাবিলার পরামর্শ দিয়ে বিজন কুমার শীল বলেন, ‘রোগের প্রাথমিক যে লক্ষণ সেটি নিজেকেই দেখতে হবে। প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে কেউ মুখে স্বাদ অথবা নাকে গন্ধ না পেলে বুঝতে হবে তিনি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত। এ সময় দেরি না করে পদক্ষেপ নিতে হবে। গরম পানিতে গারগল করা, বাইরে না যাওয়া, নিজেসহ পরিবারের অন্য সদস্যদেরও মাস্ক পরা, খাদ্যে ভিটামিন-সি বাড়াতে হবে। এ ক্ষেত্রে আমলকীসহ নানা ফলমূল, সবুজ শাকসবজি ইত্যাদি খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। এটি থাকলে আক্রান্ত হলেও ভাইরাস সুবিধা করতে পারবে না। পেটে সমস্যা হলে ওষুধ খেতে পারেন, নিমপাতা অথবা হলুদের রস খেলে সংক্রমণ হবে না। স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী বাইরে যেতে হবে। বাইরে থেকে এসে হাতটা ভালোভাবে সাবান দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। হালকা গরম পানি দিয়ে ৫-৭ বার গারগল করতে হবে। সুতি মাস্ক পরার পর তা সাবান দিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে।’

ভ্যাকসিন প্রসঙ্গে এই অণুজীব বিজ্ঞানী বলেন, ‘করোনা ধ্বংসের একটিই প্রক্রিয়া, তা হচ্ছে- ভ্যাকসিন। এর কোনো বিকল্প নেই। কারণ ভ্যাকসিন মানুষের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সৃষ্টি করে। কোন ভ্যাকসিনটা আমাদের জন্য ভালো হবে- এটি একটি প্রশ্ন। ভ্যাকসিন সবই ভালো। ভ্যাকসিন দুরকমের হয়। একটি হচ্ছে- ভাইরাসের মাধ্যমে রোগ হচ্ছে, সেটিকে মেরে ফেলা। মেরে ফেলে প্রটোকল আছে, সেটিকে ফলো করে ভার্সন তৈরি করে মানুষের মধ্যে দেওয়া হয়, যেন ভাইরাসটা মানুষের দেহে রোগ সৃষ্টি করতে না পারে। কিন্তু এখানে একটি বিষয় আছে- কোটি কোটি ভাইরাস মেরে ফেলছে এখানে একশ ভাগ কিউর হচ্ছে কিনা তা দেখা; কিন্তু ক্রিটিক্যাল। একশ ভাগ নিশ্চিত হতে হবে প্রত্যেকটি কীট ভাইরাস ভ্যাকসিনে ব্যবহৃত হচ্ছে, সেটি মারা গেছে অথবা মারতে সক্ষম হচ্ছে।

এই ভ্যাকসিনের ভেতরে কিছু কেমিক্যাল মিশানো হয়, যেন এটি মানুষের শরীরের রোগ প্রতিরোধ সৃষ্টিকারী কোষকে উজ্জীবিত করতে পারে। এ কোষগুলো এসে ভাইরাসকে খেয়ে ফেলে এবং অন্য কোষকে উজ্জীবিত করে দীর্ঘমেয়াদি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে মেমোরি তৈরি করার জন্য। এই কেমিক্যালগুলো যেন মানুষের ক্ষতির কারণ না হয় তাও দেখতে হবে। পরিবেশগত প্রভাব যাতে না পড়ে। যদি কোনো জীবিত ভাইরাস থাকে, এটি যেন ভ্যাকসিন নেওয়া মানুষ থেকে অন্য কোনো মানুষের শরীরে প্রবাহিত না হয়-এটি দেখার প্রশ্ন আসে। এটি কতটুকু রোগ প্রতিরোধ সৃষ্টি করতে পারে। এই ভ্যাকসিনের সুবিধা একই ধরনের ভাইরাস একটি জীবিত ও একটি মৃত। এটি একই অ্যান্টিবডি তৈরি করে। এ ক্ষেত্রে একটি মানুষের শরীরে ৩টি ডোজ দিতে হয়। যতগুলো ভাইরাস দেওয়া হচ্ছে, ততগুলো বৃদ্ধি পাচ্ছে না। সম্ভবত এটি নিয়ে চীন ও ভারত কাজ করছে।’

ভ্যাকসিন প্রসঙ্গে বিজন কুমার শীল বলেন, ‘আরেকটি হচ্ছে- ভাইরাসের কোনো একটি পার্টিকুলার জিন শরীরের যে অংশ দিয়ে মানুষের শরীরে প্রবেশ করে, তার আশপাশ নিয়ে একটি জিন অন্য একটি ভেক্টর ভাইরাস প্রবেশ করানো হয়। যে ভেক্টর ভাইরাসটি মানুষের দেহে কোনো ক্ষতি করে না। কিন্তু মানুষের পার্টিকুলার জিন থেকে প্রোটিনটা বেরিয়ে এসে সেটি অ্যান্টিবডি তৈরি করে। এটির একটি সুবিধা হচ্ছে- একটি অথবা দুটি ডোজ নিলে দীর্ঘস্থায়ী অ্যান্টিবডি তৈরি করতে পারে। ভাইরাসটা যতবার জন্মাবে ততবার আসবে। এর একটি অসুবিধাও হতে পারে, তবে নিশ্চিত তা না যে ভাইরাসজুড়ে দেওয়া হলো, সেটি যেন দীর্ঘমেয়াদি মানুষের শরীরে ক্ষতি না করে তা ভালোভাবে দেখতে হবে।’

সতর্ক করে দিয়ে ড. বিজন কুমার শীল বলেন, ‘একটি ভ্যাকসিন তৈরি করতে ৫-১০ বছর সময় লাগে। ভ্যাকসিন দেওয়ার পর সাধারণ মানুষের দেহে যেন দীর্ঘমেয়াদি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া না হয়- এ ব্যাপারে স্টাডি করতে হবে। এখন তো সময় নেই। এ কারণে যত দ্রুত পারছেন, অর্থাৎ শীত আসার আগেই পশ্চিমা বিশ্ব ভ্যাকসিন করছে। পাশাপাশি দেখতে হবে, ভ্যাকসিন কাকে দিতে হবে এবং অ্যাক্টিভনেস দেখতে হবে। ভ্যাকসিন দেওয়ার পর সে পার্টিকুলার পপুলেশনের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সৃষ্টি করল কিনা, সেটি প্রমাণ করতে হবে। আমি ১০ কোটি মানুষের ভ্যাকসিন করলাম এতেই হয়ে গেল তা না। এই ১০ কোটি মানুষের মধ্যে কমপক্ষে ৯ কোটি মানুষের অ্যান্টিবডি তৈরি করেছে কিনা, সেটি পরীক্ষা করে দেখতে হবে।’

কর্মজীবন

’৯০-এর দশকে বিজ্ঞানী বিজন শীল ব্ল্যাকবেঙ্গল প্রজাতির ছাগলের সংক্রামক রোগের ভ্যাকসিন আবিষ্কার করেন। ২০০২ সালে তিনি ডেঙ্গুর কুইক টেস্ট পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। ২০০৩ সালে তিনি সার্সের কুইক টেস্ট পদ্ধতি আবিষ্কার করেন, যা করোনা ভাইরাসের পূর্বসূরি। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় সার্স প্রতিরোধে যে কজন বড় ভূমিকা রেখেছেন, ড. বিজন কুমার শীল তাদের একজন। সার্স প্রতিরোধ নিয়ে তিনি সিঙ্গাপুর সরকারের বিজ্ঞানী হিসেবে কাজ করেছেন। ১৯৯৯ সালে ছাগলের মড়ক ঠেকানোর জন্য তিনি পিপিআর এবং আফলা টক্সিনের প্রতিশেধকও দেশীয় পদ্ধতিতে আবিষ্কার করে প্রান্তিক খামারিদের আশার আলো দেখিয়েছেন।

ড. বিজন কুমার শীল বলেন, ‘সর্বশেষ আমরা জানি করোনা ভাইরাস কিন্তু নাক ও মুখ দিয়ে প্রবেশ করে সংক্রমণ ঘটায়। এখানে প্রশ্ন হচ্ছে- ভ্যাকসিন ইনজেকশন দিই; তা হলে সেন্ট্রাল ইমিউনিটি সিস্টেম তৈরি করবে কীভাবে। এর একটি নিয়ম আছে। একটি দেশের যে ডিফেন্স সিস্টেম, সেই নীতিই ফলো করে। আমি শুরু থেকেই বলছি- ভ্যাকসিন হোক। কিন্তু একটি ইনজেকশন করা হোক, আরেকটি মুখে খাওয়ানো হোক। যেমন কলেরা ভ্যাকসিন। যারা এই ভ্যাকসিন তৈরি করছে, তাদের মাথায় এটি আনা উচিত। এটি এখন ভাবতে হবে।’

ভ্যাকসিন ও করোনা ভাইরাসের জিনম প্রসঙ্গে বিজন কুমার শীল বলেন, ‘এখন করোনা ভাইরাসের জিনম একটি ফ্যাক্টর আছে। বাংলাদেশসহ সারা পৃথিবীতে করোনা ভাইরাসের যে সংক্রমণ, যে সক্ষমতা; তাতে খুব একটা পরিবর্তন হয়নি। সার্চের খুব কাছাকাছি। উনারা এভাবে জিনমটা করেছেন, যেন পসিবল পরিবর্তনটা কাভার করা যায়।’

ব্যতিক্রম ছাড়া দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন বিজন কুমার শীল। তিনি বলেন, ‘কোনো ব্যক্তি একবার করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হবে না- এ ব্যাপারে আমার অবস্থান স্পষ্ট। তবে ব্যতিক্রম তো অবশ্যই আছে। যদি হতো তা হলে পৃথিবীতে প্রায় ৭০ ভাগ মানুষ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে, তাদের দ্বিতীয়বার হয়েছে? হয়নি। দুই-একজনের হয়েছে। কেন হয়েছে? কারণ হচ্ছে- অনেক সময় রোগীরা প্রয়োজনের অতিরিক্ত ওষুধ সেবন করে। ডাক্তার যা বলেন, তাও খান; আবার না বললে সেটিও খান। অতিরিক্ত ওষুধ খেলে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে যায়। এ অবস্থায় মুখ ও নাকে আবার ভাইরাস আসতে পারে। তখন আবারও আক্রান্ত হতে পারে।’

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উদ্ভাবিত অ্যান্টিবডি টেস্ট কিটের প্রয়োজনীয়তা করোনা যাওয়ার পরও ১০ বছর থাকবে বলে জানান বিজন কুমার শীল। তিনি বলেন, ‘গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ‘জিআর কোভিড-১৯ র‌্যাপিড টেস্ট’ (অ্যান্টিবডি) বিষয়ে তিনি বলেন, গত মার্চ মাসে আমাদের কিটের মূল্যায়ন করার সময় কোনো গাইডলাইন ছিল না। এফডিএ একটি গাইডলাইন অনুমোদন দিয়েছে। সেটি ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর আমাদের দিয়েছে। আমরা তাৎক্ষণিক স্টাডি করেছি। সে রিপোর্টও আমরা জমা দিয়েছি। ঔষধ প্রশাসন বলেছে, এখন এক্সটারনাল ভেরিফিকেশন করতে হবে। আমরা আবার বিএসএমএমইউকে অনুরোধ করেছি। তারা বলেছে, আমাদের কিটের আবার মূল্যায়ন করা হবে। তবে আমরা আশাবাদী।’

বাংলাদেশের করোনা পরিস্থিতির মূল্যায়ন করতে বলা হলে বিজন কুমার শীল বলেন, ‘আমাদের দেশে করোনার একটি পিক হবে। পিক না হলে কোনো সংক্রমণ যায় না। তবে এটুকু বলতে পারি, ভাইরাসের তীব্রতা অনেক কমে গেছে। এখন মানুষের শ্বাসকষ্টের চেয়ে বেশি হচ্ছে পেটের সমস্যা। পিকটা পার হলে আস্তে আস্তে বিরাট একটি জনগোষ্ঠীর মধ্যে অ্যান্টিবডি তৈরি হবে। আমি যদি ভুল না করি, শীতের আগেই সিংহভাগ সংক্রমণ শেষ হয়ে যাবে। দুই-একটা থাকবে রিমোট এলাকায়। আমাদের দেশে এতদিন করোনা ভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতি সমান্তরাল চলছে। এটি আস্তে আস্তে বাড়বে। একটা সময় এটি নেমে যাবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রথম দিকে রোগের চেয়ে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বেশি কাজ করেছে। ইউরোপ-আমেরিকায় যে মৃত্যুর মিছিল ছিল, সেটি দেখে আমরা ভেবেছিলাম আমাদের এখানেও হতে পারে। আমি প্রথম থেকেই বলে আসছি- হবে না। যদিও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও বলেছিল- এ দেশে অনেক মানুষ মারা যাবে কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তা না। মানুষ করোনাকে জয় করেছে মনের দিক থেকে। ভয়টাকে জয় করেছে। তার পরও স্বাস্থ্যবিধি আমাদের মানতে হবে। মাস্ক পরতে হবে। করোনা রোগ হাঁচি-কাশি ও শ্বাসকষ্ট। কিন্তু এর অনেক আগেই করোনা রোগের লক্ষণ দেখা যায়। কাশি ও শ্বাসকষ্ট সাত-আট দিন পরে দেখা দেয়। যখন কারও মুখের স্বাদ চলে যায়, নাকের গন্ধ চলে যায় এবং খুব সামান্য জ্বর থাকে ওটিই করোনা ভাইরাস। এটি ধীরে ধীরে কাশিতে পরিণত হয়। শ্বাসকষ্ট হয়, পেটে সমস্যা দেখা দেয়। ফলে যখন মুখের স্বাদ ও গন্ধ চলে যায়, তখন যদি রোগীসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা মাস্ক পরে, তা হলে করোনা ভাইরাস কিন্তু ছড়াতে পারে না। ওই সময় যদি বারবার হালকা গরম চা পান করে, গরম পানি দিয়ে গারগিল করে, সামান্য ফিটকিরি দিয়ে গারগিল করে, তা হলে কিন্তু ভাইরাস বেশি সুবিধা করতে পারবে না। জটিলতার দিকে যাবে না।’

করোনা সংক্রমণ বিষয়ে বস্তিবাসীসহ নিম্নআয়ের মানুষের প্রসঙ্গে বিজন কুমার শীল বলেন, ‘আমাদের দেশের মানুষ খাদ্যে প্রচুর হলুদসহ যে মসলা আমরা খাই তা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্ত করে। হলুদেও বড় গুণ রয়েছে, এটি পশ্চিমা বিশ্ব ও চীনের মানুষ খায় না। শুধু এই উপমহাদেশের মানুষই খায়। হলুদ মানুষের শরীরের প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে। আমাদের বস্তিবাসীরা যে পরিবেশে বাস করে, সেখানে অসংখ্য রকমের রোগজীবাণুর মুখোমুখি হয়ে বেঁচে আছে। ১০ তলায় থাকা ব্যক্তির চেয়ে বস্তিবাসীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি। একজন কৃষক অথবা শ্রমিক রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে কাজ করে, আরেকজন আরাম-আয়েশে থাকেন- এ পার্থক্যটা কিন্তু আছে। সে এ কারণে হয়তো বস্তিবাসী অথবা নিম্নআয়ের মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি। এটি নিয়ে একটি স্টাডি হওয়া উচিত। আন্দাজ করে বলা ঠিক হবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আস্তে আস্তে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা শুরু হবে। আমার ধারণা, আমাদের দেশে যত দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থা ফিরছে, ভারতে কিন্তু ফেরেনি। পশ্চিমা দেশগুলোয় আক্রান্তের পরিমাণ অনেক বেশি। ভাইরাসের বিভিন্ন কনটেম করেছে। যেমন স্পেনে তারা স্টাডি করে দেখেছেন একটি এলাকায় মাত্র ৫ ভাগ মানুষের অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে, বাকি ৯৫ ভাগ মানুষের অ্যান্ডিবডি আসেনি। এই ৯৫ ভাগ মানুষ কোনো না কোনো সময় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। ভাইরাস তাদের চারপাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে। দিল্লিতে স্টাডি হয়েছে। সেখানে ২৫ ভাগ মানুষের অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে। এটি আস্তে আস্তে বৃদ্ধি পাবে। এটি যখনই ৫০ ভাগ হবে, তখন কিন্তু ভাইরাস আর বিস্তার লাভ করতে পারবে না। ফলে বাতাসে এর অস্তিত্ব কমে যাবে। এটি যত কমবে, ভাইরাস তত দুর্বল হবে। তার পরও ভ্যাকসিনের প্রয়োজন আছে। ভবিষ্যতে প্রটেশনের প্রশ্ন আসবে। আমার ধারণা, যে দুশ্চিন্তা আমাদের আগে ছিল তা অনেকটা কমে আসছে।

তিনি বলেন, পিক বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়গায় হয়। যেমন ঢাকা, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, রাজশাহীতে পিক চলছে। গত এক মাসে দেখবেন বিরূপ আবহাওয়া প্রচ- গরম, বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি, এতে করে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ওপর একটি নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। এ ছাড়া মানুষও বিভিন্ন জায়গায় মুভ করেছে। এ কারণে হয়তো করোনা সংক্রমণ হালকা রাইজ হবে। কিন্তু দ্রুত নেমেও যাবে। এটি মুখে বলা ঠিক নয়। চীন, স্পেন, ভারত, কোরিয়াসহ অন্য দেশের মতো আমাদের স্টাডি করে দেখতে হবে কতভাগ মানুষের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে। আইসিসিডিআরবি এ ধরনের একটি পরিকল্পনা করছে। আর তা হলে সেখান থেকে একটি কংক্রিট উত্তর বেরিয়ে আসবে।’

কৃষক পরিবারের সন্তান নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়ায় ১৯৬১ সালে জন্মগ্রহণ করেন বিজন কুমার শীল। ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভেটেরিনারি সায়েন্স বিষয়ে স্নাতক ও অণুজীব বিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন। তিনি ১৯৯২ সালে পিএইচডি সম্পন্ন করেছেন ইংল্যান্ডের সারে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।

সূত্র: আমাদের সময়

নিউজ২৪.ওয়েব/ডেস্ক/মৌ দাস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *