Get the Latest News & Videos from News24 > অপরাধ ও দুর্নীতি > ‘টেকনাফের ওসি প্রদীপ দাসের নির্মমতার ফিরিস্তি লম্বা,সাংবাদিক মোস্তফা জেলে মৃত্যুর পথে’

সুভাষ সাহা: মেজর(অবঃ) সিনহা হত্যার সাথে জড়িত অন্যতম অভিযুক্ত ওসি প্রদীপ দাসের কাছে প্রাণভিক্ষা চেয়ে কোনক্রমে বেঁচে যাওয়া সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফাকে দেখতে সাংবাদিকদের একটি টিম ঢাকা থেকে কক্সবাজারে যাচ্ছেন।

সাংবাদিক ও মানবাধিকার সংগঠনের নেতা, আইনজীবি, প্রশাসনের সাবেক কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত টিমের সদস্যরা নির্যাতিত সাংবাদিক মোস্তাফার পরিবারের সাথেও দেখা করবেন।

ওসি প্রদীপ দাস ও তার সহযোগিদের রোষানলের শিকার পঙ্গু মোস্তফা দীর্ঘ ১১মাস কারাগারে রয়েছেন।
কেন এতদিনেও তিনি বের হতে পারেননি,এব্যাপারে বিস্তারিত জানতে জেলগেটে তাঁর সাথে দেখা করে খোঁজখবর নিবেন।

স্থানীয় সাংবাদিকরা জানিয়েছেন, পুলিশের নানা দুর্নীতি ও অনিয়মের সংবাদ প্রকাশের জেরে ‘কক্সবাজার বাণী’ পত্রিকার সম্পাদক সাহসী সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফাকে মাদক মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছিলো টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাসের বিরুদ্ধে। তবে, গ্রেফতারকালে পুলিশের কাজের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পায়নি স্থানীয় অনেক সাংবাদিক।

মেজর(অবঃ) সিনহা হত্যাকান্ডের পর ওসির বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করছেন ভুক্তভোগীরা। ক্রসফায়ারের ভয়ে রাতের আঁধারে কক্সবাজার থেকে পালিয়ে রাজধানীতে আসা ফরিদুল মোস্তফার জীবন আজ বিনা চিকিৎসায় কক্সবাজারের কারাগারে শারিরীক ও মানসিকভাবে নিস্তেজ হয়ে পড়েছেন। অর্থকষ্টে স্ত্রী,সন্ত্রান, পিতা-মাতাসহ পরিবারটি অসহায় দিন যাপন করছেন। দোষ একটাই পুলিশের দুর্নীতি ও অনিয়মের সংবাদ লিখতো মোস্তফা।

অমানুষিক নির্যাতনে অন্ধ প্রায় চোখ, ডানা হাত ভাংগা, আঙ্গুল থেতলানো মোস্তফা হয়কো আর সাংবাদিকতা করতে পারবে না। জানা যায়, সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফার পরিবারকে নানাভাবে হয়রানি করেছেন টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাস। কোনো পরোয়ানা ছাড়াই ঢাকার পল্লবী থেকে তাকে ধরে নিয়ে টেকনাফ থানায় তিন দিন আটকে রেখে চোখে মরিচের গুড়া ছিটিয়ে অমানুষিক নির্যাতন করা হয়। পরে মিথ্যা মামলা দিয়ে আদালতে পাঠানো হয় সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফা খানকে।

২০১৯ সালে পরিবারের পক্ষ থেকে ঢাকায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ফরিদুল মোস্তফার স্ত্রী হাসিনা আক্তার লিখিত বক্তব্যে এসব অভিযোগ জানিয়েছিলেন।

তিনি জানান,‘তার স্বামী বিভিন্ন সময় টেকনাফ থানার ওসিসহ পুলিশ সদস্যদের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশ করেছেন। এ কারণে তাকে ২০১৯ সালের ২১ সেপ্টেম্বর রাজধানীর মিরপুর এলাকার বাসা থেকে ধরে নিয়ে শারীরিক নির্যাতন করে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। সে সময় তার চোখে মরিচের গুঁড়া দিয়ে নির্যাতন করায় বর্তমানে দুটি চোখই নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এছাড়া তার হাত-পা ভেঙে দিয়েছে পুলিশ। চিকিৎসক জানিয়েছেন তার এক চোখ নষ্ট হয়ে যেতে পারে’। ফরিদুল মোস্তফার মেয়ে সুমাইয়া মোস্তফা খান বলেন, ‘তাদের পরিবারের কেউ কোনো মামলার আসামি নয়। কখনো তারা কোনো অনিয়মে জড়াননি। এরপরও পুলিশ ঠান্ডা মাথায় তার বাবাকে মামলা দিয়ে সমাজে তাদের পরিবারটিকে হেয় করেছে’।

এদিকে সাংবাদিক নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী ও বিএমএসএফ’র সাধারণ সম্পাদক আহমেদ আবু জাফর বলেন, সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফাকে যেভাবে নির্যাতন করা হয়েছে তা আইয়ামে জাহিলিয়াতের নির্যাতনকেও হার মানিয়েছে। কোন সভ্য মানুষ কিংবা পুলিশের দ্বারা চোখে মরিচের গুড়া দিয়ে বেয়োনেট দিয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় খুচিয়ে এমনকি গোপনাঙ্গেও আঘাত করা হয়েছিল। এ ঘটনার প্রকৃত কারন জানতে সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে শীঘ্রই একটি টিম কক্সবাজারে যাবেন।

নিউজ২৪.ওয়েব/ডেস্ক/মৌ দাস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *