Get the Latest News & Videos from News24 > অপরাধ ও দুর্নীতি > ফরিদপুরে সাঁড়াশি পুলিশী এ্যাকশান ও একজন ডিজিটাল রবিনহুড প্রবীর সিকদার’: পর্ব-২ (ভিডিওসহ)

নিজস্ব প্রতিবেদন: হঠাৎ পরিবর্তনের ঝড়ো হাওয়ায় ফরিদপুরে দীর্ঘদিনের দুঃশাসন ও একক রাজত্বের অবসান প্রায় সুনিশ্চিত পুলিশী অভিযানের মুখে পরিবর্তিত পরস্থিতিতে বিগত ছয় বছর ধরে জেলে বন্দি নিরপরাধ ছাত্রলীগ নেতা সত্যজিৎ মুখার্জির মুক্তির দাবিতে সোচ্চার হচ্ছেন বিক্ষুব্ধ ফরিদপুরবাসী। 

প্রভাবশালী স্থানীয় এক সংসদসদস্যের আশ্রয়ে ‘অপরাধ জগতের বাদশা’ হয়ে উঠা বরকত-রুবেল যুগলের কারসাজির শিকার হয়ে তুখোড় ছাত্রলীগ নেতা ও—-সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ ছাত্র সংসদের জিএস সত্যজিত মুখার্জিকে দেড় ডজনেরও বেশি সাজানো মামলায় ছয় বছর ধরে জেল খাটাচ্ছেন। 

শুধু সত্যজিত মুখার্জি নয়-তাঁর পিতা প্রবীন আওয়ামী লীগ নেতা ও শিক্ষক মানস মুখার্জিকেও মিথ্যা মামলায় জেল খাটিয়েছে ওই দুষ্ট চক্র।এই দুধর্ষ বরকত-রুবেলদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ  আওয়ামী লীগের অন্তপ্রাণ শতশত নেতাকর্মীও বিগত ৭/৮ বছর  যাবৎ নির্জীব-নিস্ক্রিয়। খালি মাঠে অপ্রতিরোধ্য ভয়ংকর বরকত-রুবেলসহ দশ চিহ্নিত অপরাধীকে গ্রেফতারের পর সাঙ্গপাঙ্গরা ঢাকা দিয়েছে। 

দীর্ঘদিন ধরে ফরিদপুরজুড়ে বলবৎদুঃশাসনের এইসব হোতাদের লাগাম টেনে ধরায় ফরিদপুরের আকাশে আলোর ঝলকানি ওসুশাসনের হাতছানি। নিপীড়িত মানুষের মুখে মৃদু হাসির রেখা। গত ৮;১০ বছরে আওয়ামী লীগে বিএন পি জামাত ঘরানা থেকে অনুপ্রবেশকারী মুখোশধারীরারা সদর্পে ‘মুজিবকোট’ পড়ে টাকার পাহাড় গড়ে পরিপুষ্ট হয়েছেন। নিঃস্ব হয়েছেন আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের খাঁটি নেতাকর্মীরা।

হাইকমান্ডের নির্দেশে  দীর্ঘ নীরবতা ভেঙে গর্জে উঠেছে পুলিশ বাহিনী ।এর মধ্য দিয়ে অত্যাচারির খড়গ কৃপাণ ধুলোয় মিশে যাওয়ার সম্ভাবনা উঁকি দিয়েছে বলে পর্যবেক্ষকদের অভিমত। তবে, পরিস্থিতি রাতারাতি পাল্টে যাবে কেউ ঘুর্ণাক্ষরেও আঁচ করতে পারেনি। এমন একটি দিনের আশায় অপেক্ষার প্রহর গুণেছেন শান্তিপ্রিয় ফরিদপুরবাসী। এতোটা দীর্ঘ সময় ভয়ে আতঙ্কে কেউ টুশব্দটি না করলেওব্যতিক্রম প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর ফরিদপুরের ভূমিপুত্র সাহসী কলমযোদ্ধা প্রবীর সিকদার।

নিপীরিত মানুষের প্রচ্ছন্ন সহযোগিতায় প্রবীর সিকদারের বিরামহীন শাণিত কলম যুদ্ধের ধারাবাহিকতায় বর্তমান সন্ত্রাস বিরোধী অভিযান। ২৪ ঘন্টা ব্যবধানে ফরিদপুরের আতঙ্ক অস্ত্রবাজ লুটেরা ‘বরকত – রুবেল’ সহ দশ চিহ্নিত সন্ত্রাসী  গ্রেফতারের অবিশ্বাস্য ঘটনায় খাঁটি আওয়ামী নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে আনন্দ উচ্ছাস ও স্বস্তির নিঃশ্বাস। শহরে স্বতঃস্ফূর্ত আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণের অভাবনীয় দৃশ্য। 

কতোকাল পর বঙ্গবন্ধু শেখমুজিব ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জেলা এই শ্রী অঙ্গণের পবিত্র মাটিতে ‘মেঘ না চাইতে বৃষ্টি’। যেন বাঁধভাঙা অনবদ্য এক আনন্দধারা! পুলিশী অভিযানের মুখে অস্ত্রবাজ অপরাধীরা গা ঢাকা দিলেও পুলিশ ও ফেসবুক যোদ্ধা প্রবীর সিকদার পিছু ছাড়েননি। প্রবীর সিকদার পলাতকদের পুলিশে ধরিয়ে দেয়ার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একের পর এক ছবি ও তথ্য প্রকাশ করে অভিনব উপায়ে পুলিশী অভিযানকে সহযোগিতা করছেন।

এই সেই রোমহষর্ক হেলমেট বাহিনী! এরাই নিয়মিত মোটরবাইকেলের মহড়া নিয়ে ফরিদপুরে টেন্ডারবাজীসহ নানা অবৈধ সুবিধা নিতে শহরময় দাবড়িয়ে বেড়াতো। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে পুলিশের দাবড়ানিতে এখন ‘বরকত-রুবেলে’এর গড়া হেলমেট বাহিনীর সদস্যদের অস্তিত্ব খোঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। সদলবলে লাপাত্তা।

উল্লেখ্য, গত দশটি বছরেকতো নিরীহ মানুষ এই লুটেরা সন্ত্রাসীদের প্রতিহিংসার শিকার হয়ে জেল-জুলুম  নির্যাতন ভোগ করে সর্বশ্রান্ত হয়েছেন – গুণে শেষ করা যাবেনা। এরই একটি জ্বলন্ত উদাহরণ মুক্তিযোদ্ধা ও শিক্ষক প্রবীন আওয়ামী লীগ নেতা মানস মুখার্জি। 

বিজ্ঞাপনটি দেখতে ক্লিক করুন

যে হাতে সোনার কাঁকন ও কলমই মানায়, সেই পবিত্র হাতে অবিশ্বাস্য’লোহার হাতকড়া’ আর অবর্ণনীয় নির্যাতন দেখে ফরিদপুরের কতো মানুষ নীরবে চোখের জল ফেলেছে। রাজনীতির মাঠ দখলের অসৎ উদ্দেশ্যেএকই রাজনৈতিক দলের পিতা-পুত্রের উপর এমন নির্মম অত্যাচার মধ্যযুগের বর্বরতাকেও হার মানায়।

ছয় বছর ধরে কারাগারে বন্দি সত্যজিত মুখার্জির সান্নিধ্য থেকে বঞ্চিত স্ত্রী শৌমিকা মজুমদার ও তিন শিশুসন্তান। এ দম্পতির বড় ছেলে যুবরাজ মুখার্জির বয়স (১০), মেয়ে স্বস্তিকা মুখার্জি (৮) ও সর্বকনিষ্ঠা সমৃদ্ধির বয়স (১)এক। উল্লেখ্য,জামিনে বের হওয়ার পর এ্যাড.সত্যজিত মুখার্জিকে জেলগেটে  কখনো বা বাসা থেকে থানায় ডেকে নিয়ে  নতুন অজ্ঞাত মামলায় কোর্টে চালান করা হয়৷যেন আগে থেকেই রেডি থাকে মামলা। 

এ প্রসঙ্গে সত্যজিতের স্ত্রী শ্রীমতি শৌমিকা মজুমদার তাঁর জীবন যুদ্ধের কষ্টের কথা এই প্রতিবেদককে মোবাইলে অডিও রেকর্ডে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ফরিদপুরের সম্ভ্রান্ত ব্রাম্মন পরিবারের সন্তান এ্যাড, সত্যজিত মুখার্জি এমএ, এলএল এম, এম এড- ঢাকা ইউনিভার্সিটি। আইন পেশায় থাকলেও ছাত্রজীবন থেকেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতির সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত।

বড় ভাই মনজিত মুখার্জি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ম্যানেজমেন্টে স্নাতকোত্তর শেষে লন্ডন থেকে এমবিএ করে ঢাকায় কর্মরত।কনিষ্ঠ ভাই সেনাবাহিনীর মেজর। ২০১৭ সালে একটি তুচ্ছ ঘটনা অর্থাৎ কলেজের বড়ভাই ছোটভাই ডাকা নিয়ে সৃষ্ট দ্বন্দের জেরে সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের মেধাবী ছাত্র ও ছাত্রলীগ নেতা মেহেদী হাসান আলিফের চোখে ভ্রমর ঢুকিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে একটি চোখ নষ্ট করে দেয় একজন সাংসদের আশীর্বাদ পুষ্ট কয়েকজন দুর্বৃত্ত। 

ওই নৃশংস ঘটনার কোন বিচার পায়নি আলিফের পরিবার। এমনকি সেসময় রহস্যময় কারণে থানায় অভিযোগ পর্যন্ত গ্রহণ করেনি। এসব দেখে আওয়ামী লীগের অগণিত ত্যাগী নেতাকর্মী হাতপা গুটিয়ে রাখতে বাধ্য হয়েছিলেন। মানস মুখার্জিকে হাতকড়ার আগে তাঁরই সন্তান তুখোড় ছাত্রলীগ নেতা সত্যজিত মুখর্জীকে জেলে পুড়ে  জীবনটাকে করেছে তছনছ।  

সন্তানের আইনি লড়াইয়ে তথা জামিনে বাবা মানস মুখার্জি যাতে কোন ভূমিকা রাখতে না পারে সেজন্য বাবা মানস মুখার্জিকেও  মিথ্যা  মামলায় হাতকড়া পড়িয়ে জেলে আটকে রাখে অনেকদিন!  আইনজীবীরাও —কোর্টে দাঁড়াতে সাহস করেননি! প্রশ্ন উঠেছে? *বিএনপি ঘরানা থেকে আসা হাইব্রিড নব্য আওয়ামীলীগ নেতা ‘বরকত – রুবেল’ দুই ভাই এতো স্পর্ধা বা দুঃসাহস পেলো কোথা থেকে?

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ১ এপ্রিল  উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ পত্রিকার সংখ্যায়প্রবীর সিকদার স্বনামে বিতর্কিত ‘বরকত’ সম্পর্কে  ‘আমার বোন শেখ হাসিনাকে খোলা চিঠি ‘চিনে নিন কে এই বরকত’ শিরোনামে বিস্তারিত প্রকাশ করেছিলেন।

সেই ছবিতে দেখা যায়, নিরাপত্তা বেস্টনি গলিয়ে প্রথানমন্ত্রীর ফরিদপুর সফরকালে  প্রধানমন্ত্রীকে এই রুবেল পা ছুঁয়ে সালাম করছেন!তারপর রুবেলকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ইতোমধ্যে দুদক রুবেলের ৬৬ কোটি টাকার অনুসন্ধান পেয়েছেন। সূত্রঃমানবজমিন ও অন্যান্য পত্রিকা। প্রকৃতির প্রতিশোধ বলে কথা, সেই অত্যাচারী রুবেল-বরকতদের হাতেও এখন হাতকড়া।

বহুল আলোচিত ফরিদপুরের অপরাধ রাজত্বে চূড়ান্ত আঘাত। রায়ট কার নিয়ে একশনে (নামে) ফরিদপুর পুলিশ। একরাতের অভিযানেই ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সহ ১০ মাফিয়া অপরাধী গ্রেফতার।

‘প্রথমে’ ৭ জুন প্রথম অভিযানে ভয়ংকর দুই ভাই সাজ্জাদ হোসেন (edit  ‘বরকত’) ও ইমতিয়াজ হাসান রুবেলকে অস্ত্র,বিদেশি মদ ও বিপুল অংকের নগদ টাকাসহ গ্রেফতার করে পুলিশ। বিগত দশটি বছর ধরে ফরিদপুরে আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতা-কর্মীরা ছিলেন ছন্দহারা এতিম! তাঁদের কান্নার আওয়াজ কেউ শুনতে সাহস পায়নি! প্রতিবাদ মুখর ছিলেন গরীবের ডাক্তার প্রবীর সিকদার।

একের পর এক মিথ্যা মামলায় বিপর্যস্ত করা হয়েছিল তুখোড় ছাত্রলীগ নেতা, ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ ছাত্র সংসদের জিএস সত্যজিত মুখার্জিকে। নির্মমতার এখানেই শেষ নয়, সেই মামলা সন্ত্রাস থেকে রেহাই পাননি সত্যজিত মুখার্জির বাবা, মুক্তিযোদ্ধা ও প্রবীন শিক্ষক মানস মুখার্জিও! এই ছবিটি সেই নির্মমতার জ্বলন্ত স্বাক্ষী। প্রকৃতির প্রতিশোধ বলে কথা, সেই অত্যাচারী রুবেল-বরকতদের হাতেও এখন হাতকড়া।

একসময়ের বিএনপি ক্যাডার বরকত রাতারাতি আওয়ামী লীগ নেতা বনে গিয়ে ২০১৫ সালে প্রধানমন্ত্রীর পা ছুঁয়ে সালাম করে রাতারাতি বিখ্যাত বনে যায়! এই প্রবীর সিকদারের কলম সেদিনও জ্বলসে উঠেছিল! এই সেই ছবি ২০১৫ সালে ২৭…. প্রধানমন্ত্রীর ফরিদপুর সফরকালে ক্যামেরায় ধারন করা

ঘরের শত্রু বিভীষণ চেনাতে প্রবীর সিকদার একাই একশ’। একটি সামাজিক আন্দোলনের নাম ফরিদপুরবাসীর লড়াকু কলম সৈনিকপ্রবীর সিকদার। বিলম্বে হলেও অবশেষে(ফরিদপুরের) গ্রেফতার অভিযানে ফরিদপুরে এখন সুনশান নীরবতা ও স্বস্তি। ভয় ও আতঙ্কের ফরিদপুরের ফিরে আসবে হারানো শান্তিময় পরিবেশ। রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে প্রবীর সিকদার দেশের তৃতীয় নয়ন হয়ে অসামান্য অবদান রেখে চলেছেন।

টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া অত্যাচারীর মুণ্ডুপাত করা ডিজিটাল এক রবিনহুডের নাম প্রবীর সিকদার। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লক্ষকোটি ন্যায়যোদ্ধা ফলোয়ার তাঁর সাহস ও শক্তির উৎস। মহান মুক্তিযুদ্ধে বাবাসহ পরিবারের ১৪ জন শহীদ পরিবারের সন্তানফরিদপুর জেলায় জমিদার পরিবারের ৪র্থ প্রজন্মের আলোর মশাল প্রবীর সিকদার। শিক্ষকতা থেকে সাংবাদিক প্রবীর সিকদার গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরের কানাইপুরে (বেগম রোকেয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় নামে একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন।

এলাকার প্রভাশালী রাজাকারগং নিয়ে লেখালেখির কারণে প্রতিহিংসার শিকার হয়ে ২০০১ সালে দৈনিক জনকণ্ঠের ফরিদপুর প্রতিনিধি থাকাকালে সন্ত্রাসীর বোমা হামলায় পঙ্গুত্ব বরণ করেও কলম যুদ্ধ থেকে সরে আসেননি আপোষহীন প্রবীর সিকদার। তাঁকে বোমা হামলার নেপথ্যে একাত্তরে পাক হানাদারদের সহযোগী  মুসা ও বাচ্চু রাজাকারের হাত আছে বলে অভিযোগে অটল তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত উদ্যোগে বিদেশে চিকিৎসা নিয়ে এক পা ও জীবন নিয়ে দেশে ফেরেন।
প্রধানমন্ত্রীর স্নেহধন্য প্রবীর শিকদার ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রীর সফর সঙ্গী হয়ে চীন সফর করেন। প্রবীর সিকদার বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার সঙ্গে কারো তুলনা তিনি সহ্য করতে পারেননা।

শিশুবয়সে পাকবাহিনীর দোসর রাজাকারদের হামলায় বাবা-কাকাসহ পরিবারের ১৪ জন সদস্য শহীদ হওয়ার বঙ্গবন্ধুকে বাবার মর্যাদায় হৃদয়ে ধারন করে আসছেন।এ নিয়ে তাঁর ভনিতা বা রাখঢাক নেই। সেইসূত্রে শেখ হাসিনা তাঁর বোন। ওয়ান ইলেভেনের সময় শেখ হাসিনা আটক হলে তিনি  ‘আমার বোন শেখ হাসিনা’ নামে একটি আবেগময় বই প্রকাশ করেন প্রবীর সিকদার।

সততা ও বিশ্বাসের মিসেলে কষ্টিপাথরে ঘসা নির্লোভ বিদগ্ধ লেখক,সমালোচক ও নির্ভীক সাংবাদিক ছেড়ে কথা বলেন না।বিশ্বাসের জায়গা থেকে নড়েন না। রাজাকার নিয়ে এলার্জি থাকায় রাজাকারের প্রশংসায় দ্রুতই মেজাজ হারান তিনি।

২০১৪ সালে অনলাইন সংবাদপত্র বাংলানিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে প্রকাশিত এক লেখায় মুসা বিন শমসেরকে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তুলনা করায়  নিজের ফেইসবুক পাতায় সমালোচনায় মুখর হন শহীদ পরিবারের সন্তান প্রবীর সিকদার। সেই লেখালেখিকে কেন্দ্র করে হুমকি পাওয়ার পর ঢাকায় থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে ব্যর্থ হয়ে প্রবীর সিকদার গত ১০ আগস্ট ২০১৫  নিজের ফেইসবুক পাতায় একটি স্ট্যাটাসে নিজের জীবন নিয়ে ঝুঁকির কথা জানিয়ে এক মন্ত্রীসহ কয়েকজনকে দায়ী কর প্রাণহানির শঙ্কা প্রকাশ করে লিখেন, “আমি খুব স্পষ্ট করেই বলছি, নিচের ব্যক্তিবর্গ আমার জীবন শংকা তথা মৃত্যুর জন্য দায়ী থাকবেন : ১. একজন মন্ত্রী(নাম অনুল্লেখ্য) ২. রাজাকার নুলা মুসা ওরফে ড. মুসা বিন শমসের, ৩. ফাঁসির দণ্ডাদেশ প্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী বাচ্চু রাজাকার ওরফে মাওলানা আবুল কালাম আজাদ এবং এই তিন জনের অনুসারী-সহযোগীরা।”

এরপরই মন্ত্রীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণের অভিযোগ তুলে তথ্য প্রযুক্তি আইনে মামলাটি করেন মন্ত্রীর পক্ষে ফরিদপুরের আইনজীবী স্বপন পাল।তারপর ১৬ আগস্ট ২০১৫ দ্রুত গ্রেফতার ও হাতকড়া পড়িয়ে পঙ্গু প্রবীর সিকদারকে কোর্টে চালান দেন পুলিশ। পরবর্তীতে দেশজুড়ে প্রতিবাদের মুখে দুই রাত জেলে কাটিয়ে জামিনে ছাড়া পান।
(প্রবীর সিকদার বর্তমানে উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ এবং দৈনিক বাংলা ৭১ নামের পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক। তিনি এর আগে দৈনিক জনকণ্ঠ, সমকাল ও কালের কণ্ঠে কাজ করেন।

প্রবীর সিকদারকে গ্রেপ্তারের পর ইন্টারনেটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিন্দা-প্রতিবাদের ঝড় বইছে। বিক্ষোভ করেছে গণজাগরণ মঞ্চও।তারপর  ১৯ আগস্ট সসম্মানে জামিনে বের হয়ে আসেন।
সকল হুমকি তুচ্ছ করে যে কোন অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার প্রবীর সিকদার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ধারাবাহিকভাবে ক্ষুরধার প্রতিবাদী লেখালেখির একটি স্বতন্ত্র জমিন তৈরি করতে সমর্থ হয়েছেন।

বলা যায়, আওয়ামী লীগের ‘ঘরের শত্রু বিভীষণ’ চিহ্নিত করতে ‘প্রবীর সিকদার নিজেই একটা শক্তিশালী ‘তৃতীয় মঞ্চ’ প্রতিষ্ঠা করে নিয়েছেন।যেমন, ১. গোপালগঞ্জে পুলিশের পিটুনিতে নিখিল তালুকদারের নির্মম মৃত্যুর ঘটনা ৫ লাখ টাকায় আপস হয়ে যাওয়ায় প্রতিবাদে গর্জে ওঠেন তিনি। পরে ওই ঘটনার হত্যা মামলা দায়ের করা হয় এবং দায়ী পুলিশের এক এএসআই ও তার এক সহযোগীকে গ্রেফতার করা হয়। ২.ফরিদপুরে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তদের তিনি লড়েই যাচ্ছেন। তাঁর ক্ষুরধার কলমযুদ্ধে ভীত মহীরুহ শক্তি রাজপথে ফরমায়েশি   মানববন্ধন,পরিবার পরিজনদের হেনস্থার পরও অবিচল প্রবীর সিকদার। কোনকিছুতে অপরাধীদের শেষ রক্ষা হয়নি। অবশেষে ফরিদপুরের দুর্বৃত্ত চক্রের কয়েক সদস্যকে সাবেক এক মন্ত্রীর বাড়ি থেকে গ্রেফতার করায় সাফল্য পায় প্রবীর সিকদারের লেখা। ৩. হবিগঞ্জে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় একজন সাংবাদিক সুশান্ত দাস গ্রেফতার হওয়ার পর প্রতিবাদে গর্জে ওঠেন তিনি। সেখানেও প্রবীর সিকদারের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তদের ‘ফরমায়েশি মানববন্ধন! ৪. শরিয়ত বয়াতির মুক্তির দাবিতে তিনি সোচ্চার।
৫. নিখোঁজ সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলের সন্ধানের দাবিতে তিনি প্রতিদিন লেখালেখি করেন। অবশেষে সেই কাজলকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। ৬. ফেনির সাংসদ পাপ্পু কুয়েতে গ্রেফতার নিয়েও প্রবীর সিকদারের অসামান্য ভূমিকা।

নিউজ২৪.ওয়েব/ডেস্ক/মৌ দাস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *