Get the Latest News & Videos from News24 > এক্সক্লুসিভ ভিডিও > ‘করোনা ভীতির’ মধ্যে সাংবাদিক কাজল জেলখানায়! (ভিডিও সহ)

সুভাষ সাহা: এক মর্মান্তিক ও বেদনাদায়ক ঘটনা। ‘করোনা ভীতির’ মধ্যে জ্যাষ্ঠ সাংবাদিক কাজল জেলখানায়? এ পরিস্থিতিতে এক অজনা আশঙ্কায় ঘরে দিন কাটছে ক্যান্সারে আক্রান্ত কাজলের স্ত্রী, বৃদ্ধ বাবা অসহায় সন্তানদের।

০৩ মে রবিবার বেনাপোলে গ্রেফতার নিখোঁজ সাংবাদিক সফিকুল ইসলাম কাজলের মাথায় প্রধানমন্ত্রীর হাত এমন একটি ছবি ও কাজলকে পিছমোড়া করে হাতকড়া পড়ানো আরো একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর দেশবিদেশে তোলপাড়!

গত ১০ মার্চ মেয়েকে উদয়ন স্কুল থেকে বকসিবাজার বাসায় রেখে দুপুর আড়াইটার দিকে ঢাকার হাতিরঝিলের অফিসে কর্মস্থলে যান। সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে অফিস থেকে আবার বের হন। তারপর ৫৩ দিন নিখোঁজ ছিলেন ফটো সাংবাদিক কাজল। বেনাপোলে বিজিবির সদস্যরা সন্দেহভাজন অনুপ্রবেশকারী হিসেবে কাজলকে আটক করে স্থানীয় থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন। তারপর যশোরের আদালত অনুপ্রবেশের মামলায় জামিন মঞ্জুর করলেও হঠাৎ বদলে যায় প্রেক্ষাপট! (দৃশ্যপট) কাজলের বিরুদ্ধে ঢাকায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ধারায় তিনটি মামলা থাকায় ৫৪ ধারায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। প্রশ্ন উঠেছে,কী এমন ধৃষ্টতাপূর্ণ আচরণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রিয়ভাজন(স্নেহভাজন) আলোচিত সুপরিচিত ফটো সাংবাদিক কাজলের উপর এমন নিষ্ঠুর অস্বাভাবিক আচরণ? কাজল নিখোঁজের পর একটি খবর আলোচনায় আসে। তা হলো একদিন আগে রাজধানীর শেরেবাংলানগর থানায় কাজলের নামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন এক প্রভাবশালী এমপি।

সম্প্রতি যুব মহিলা লীগের বহিস্কৃত নেত্রী পাপিয়ার সাথে যোগাযোগ আছে এমন খবরের জন্য যে তিনজন সাংবাদিকের নামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়,সেই মামলার তিন নাম্বার আসামি সফিকুল ইসলাম কাজল।

কাজল নিজেও জানতোনা তার বিরুদ্ধে এ মামলা আছে? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চতর ডিগ্রি নেয়া ফটো সাংবাদিক কাজল বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় কাজ করেছেন।বর্তমানে দৈনিক পক্ষকাল পত্রিকার সম্পাদক। কাজল নিখোঁজ হওয়ার পরদিন পরিবার চকবাজার থানায় একটি জিডি করেছিলেন পরিবার। কাজল ব্যাক্তিগতভাবে জাসদ রাজনীতির সাথে জড়িত বলে বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে।

ইতোপূর্বে আইসিটি আইনে গ্রেফতার হওয়ার পর জেলখাটা বহুল আলোচিত প্রতিবাদী সাংবাদিক প্রবীর সিকদার প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে একটি নিউজ পোর্টালে আবেগঘন ভাষায় লিখেছেন; মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, রবিবার ছিল আন্তর্জাতিক প্রেস ফ্রিডম ডে! সেই সাথে দেশজুড়ে চলছে ভয়াবহ করোনা আতঙ্ক। এই সময়ে একজন সাংবাদিক, যার মাথায় পড়েছিল আপনার স্নেহের হাত, সে জেলে যেতে পারে না, জেলে থাকতে পারে না! আমি বিশ্বাস করি যে, আপনার স্নেহের হাত যার মাথায় পড়ে, সেই মাথা কখনোই আদর্শ বিচ্যুতির ধারায় নিজেকে টেনে নিয়ে যায় না! প্রবীর সিকদার কাজলের আশু মুক্তি দাবি করেন।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, কাজলের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করার দুইদিন পরই তিনি নিখোঁজ হন। দুটি মোবাইল ফোন বন্ধ, মোটরবাইকেরও হদিস নেই! এদিকে কাজলের পরিবার আশায় বুক বেঁধে অপেক্ষায় প্রহর গুণছে কখন কাজল অক্ষত শরিরে ঘরে ফিরবে। কাজল বেঁচে আছেন, এ খবরে বেনাপোলে ছুঁটে যান ছেলে মনোরম পলক। পথে পথে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ মাড়িয়ে ঢাকা থেকে ছুটে গিয়েছিল যশোরে,বাবাকে সঙ্গে করে ঢাকায় বাসায় ফিরবেন আশায়! শেষঅবদি বাবাকে নিয়ে ফেরা হলো না। কাজলের বৃদ্ধ বাবা ও কেন্সারে আক্রান্ত কাজলের স্ত্রীসহ পরিবারের সদস্যরা নামাজ,কোরান পাঠ আর সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনার মধ্য দিয়ে দিন পার করছেন।

নিউজ২৪.ওয়েব/ডেস্ক/মৌ দাস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *