Get the Latest News & Videos from News24 > শিক্ষা > ঝালকাঠিতে প্রতিবন্ধীদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে বিদ্যালয়টি

কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবেদন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। তাদের বেতন-ভাতা দেয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে– জেলা প্রশাসক মো. জোহর আলী

বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী বিদ্যালয়টি সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধন বিষয়ে আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি–স্বপন কুমার মুখার্জি

অনলাইন ডেস্ক:  আজ আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস। প্রতিবন্ধীদের মর্যাদা সমুন্নতকরণ, অধিকার সুরক্ষা, প্রতিবন্ধিতা বিষয়ে সচেতনতার প্রসার ও উন্নতি সাধন নিশ্চিতের লক্ষ্যে ১৯৯২ সাল থেকে জাতিসংঘ ঘোষিত এ দিবসটি বিশ্বব্যাপী পালন করা হচ্ছে।

বাংলাদেশেও আজ নানা আয়োজনে দিবসটি পালিত হচ্ছে জাতিসংঘের সদস্য হিসেবে। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘অভিগম্য আগামীর পথে’। এদিকে দিবসটি উপলক্ষে পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

‘প্রতিবন্ধীরা পরিবার ও সমাজের বোঝা নয়’ সবার মাঝে এমন ধারণা ছড়িয়ে দিতে ঝালকাঠিতে ২০১১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ‘সুইড বাংলাদেশ বুদ্ধি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়’। সোসাইটি ফর দ্যা ইন্টেলেকচুয়ালি ডিজেবল বাংলাদেশ-সুইড পরিচালিত প্রতিষ্ঠানটিতে ‘প্রতিবন্ধীদের প্রতি করুণা নয়, তারাও আমাদেরই’ এমন উদ্দেশ্য নিয়ে পাঠদানসহ মানসিক বিকাশের চেষ্টা করা হচ্ছে। শারীরিক ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধী শিশুরা এখানে পড়ালেখা ও মানসিক বিকাশের সুযোগ পাচ্ছে। পড়াশোনার পাশাপাশি তাদের মানসিক বিকাশে শেখানো হচ্ছে নাচ, গান। সেই সঙ্গে খেলাধুলাও।

বেসরকারি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠার ৯ বছর পর এখনও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে ঝুলে আছে বিদ্যালয়টির রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম। হয়নি এমপিওভুক্ত। দিনের পর দিন বেতন পাচ্ছেন না শিক্ষক-কর্মচারীরা। আছে অবকাঠামোগত সমস্যাও। এতসব সমস্যা সত্ত্বেও নিজেদের প্রচেষ্টায় সব বাধা পেরিয়ে এগিয়ে চলেছে বিদ্যালয়টির কার্যক্রম।

শুরু থেকেই বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী সবাই কাজ করছেন বিনা বেতনে। অর্থাভাবে থমকে আছে বিদ্যালয়ের চার তলা ভবনের নির্মাণ কাজ। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি ও শিক্ষক-কর্মচারীরা জানান, ব্যক্তিগত অনুদানে আমরা নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে যাচ্ছি। বিদ্যালয়টির কার্যক্রম অব্যাহত রাখার জন্য তারা সরকারি অনুদান কামনা করেন।

ঝালকাঠির জেলা প্রশাসক মো. জোহর আলী বলেন, বিদ্যালয়টির কার্যক্রম টিকিয়ে রাখতে উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবেদন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। তাদের বেতন-ভাতা দেয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ৩১ জুলাই ১২ শতাংশ জমিতে এই বিদ্যালয়ের চারতলা ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু হলেও অর্থাভাবে এখনও শেষ হয়নি। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে মোট ১৮৫ জন বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধী শিশু পড়ালেখার পাশাপাশি ফিজিওথেরাপির সুযোগ পাচ্ছে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লুৎফুন্নেছা বেগম জানান, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন নিয়ে বিদ্যালয়টির কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। নিবন্ধন তথা এমপিওভুক্তির জন্য আবেদন করা আছে, আশা করি শিগগিরই বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত করা হবে।

জেলা সমাজ সেবা অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, ঝালকাঠিতে বিভিন্ন বয়সের প্রতিবন্ধী নারী-পুরুষ রয়েছেন প্রায় ১১ হাজার। তাদের মধ্যে ভাতা পাচ্ছেন ৫ হাজার ৬২১ জন।

সূত্রটি আরও জানায়, জেলায় মোট অটিজম প্রতিবন্ধী রয়েছেন ৫০৩ জন। শারিরীক প্রতিবন্ধী ৪ হাজার ৫৮১ জন। মানসিক প্রতিবন্ধী ১ হাজার ৫৫৯ জন। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ১ হাজার ৩৪১ জন। বাক প্রতিবন্ধী ৩৬৭ জন। বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ২৫৬ জন। শ্রবণ প্রতিবন্ধী জে ৩৩৭ জন। শ্রবণ-দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ৬৪ জন। অন্যান্য প্রতিবন্ধী ৭৫ জন। সেরিব্রালপালসি প্রতিবন্ধী ২৬৮জন। বহুমাত্রিক প্রতিবন্ধী ১ হাজার ৮৭০ জন। ডাউন সিনড্রম প্রতিবন্ধী ৩৮ জন।

জেলা সমাজ সেবা অধিদফতেরের উপ-পরিচালক স্বপন কুমার মুখার্জি জানান, ঝালকাঠিতে বিভিন্ন বয়সী প্রতিবন্ধী নারী-পুরুষ রয়েছেন ১০ হাজার ৯৯৯ জন। তাদের মধ্যে ভাতা পাচ্ছেন ৫ হাজার ৬২১ জন। যেসব পরিবার দুস্থ, অসহায় সেসব পরিবারের প্রতিবন্ধীদের ভাতা প্রদানের আওতায় নেয়া হয়েছে।

তিনি আরও জানান, বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী বিদ্যালয়টি সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধন ও এমপিওভুক্ত করণের জন্য আবেদন করা হয়েছে। এ বিষয়ে আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

নিউজ২৪.ওয়েব/ডেস্ক/নিরাক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *