Get the Latest News & Videos from News24 > আইন-আদালত > নুসরাতের জবানবন্দির ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ায় ওসির ৮ বছরের কারাদণ্ড

অনলাইন ডেস্ক: ফেনীর সোনাগাজীতে সন্ত্রাসের শিকার হয়ে নির্মমভাবে নিহত হওয়া মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির জবানবন্দির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার মামলায় বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে সোনাগাজী থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেনকে ৮ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেইসঙ্গে তাকে ১৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত করা হয়েছে।

বিচারক ওসি মোয়াজ্জেমকে মামলার ২৬ নম্বর ধারায় ৫ বছর কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করেন। এছাড়া ২৯ নম্বর ধারায় ৩ বছরের কারাদণ্ড ও ৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। আদালত অর্থদণ্ডের এই টাকা ভুক্তভোগী নুসরাতের পরিবারকে দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন।

ঢাকার সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ২টা ৪০ মিনিটে এই মামলার রায় ঘোষণা করেন। এর আগে বিচারক দুপুর ২টা ২৪ মিনিটে মামলার রায় পড়া শুরু করেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে ওসি মোয়াজ্জেমকে ঢাকার কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে আদালতে নেওয়া হয়। গত ২০ নভেম্বর বুধবার মামলাটিতে রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্কের শুনানি শেষে আজ রায় ঘোষণার দিন ঠিক করা হয়েছিল।

উল্লেখ্য, গত ১৫ এপ্রিল সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন ঢাকার সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালে ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলাটি করেন। ওইদিন ট্রাইব্যুনাল মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দেয়।

তদন্ত শেষে গত ২৭ মে পিবিআইর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার রীমা সুলতানা ট্রাইব্যুনালে ওসি মোয়াজ্জেমকে অভিযুক্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করেন। একই দিন ট্রাইব্যুনাল প্রতিবেদন আমলে নিয়ে আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। মামলায় চলতি বছর ১৬ জুন ওসি মোয়াজ্জেম গ্রেপ্তার হন এবং ১৭ জুন ট্রাইব্যুনাল তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

গত ২৪ অক্টোবর নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার দায়ে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলাসহ ১৬ জন আসামির সবাইকে ফাঁসির আদেশ দেন আদালত। সেইসঙ্গে প্রত্যেক আসামিকে ১ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।

গত ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলা নিজ কক্ষে ডেকে নিয়ে নুসরাতের শ্লীলতাহানি করেন। এ ঘটনায় তার মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী থানায় মামলা করলে পুলিশ সেই অধ্যক্ষকে গ্রেপ্তার করে। ওই মামলায় নুসরাতের বক্তব্য গ্রহণের সময় তা ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে।

মামলা তুলে না নেওয়ায় ৬ এপ্রিল মাদ্রাসার প্রশাসনিক ভবনের ছাদে ডেকে নিয়ে বোরকাপরা পাঁচ দুর্বৃত্ত নুসরাতের হাত-পা বেঁধে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। পরে ১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অগ্নিদগ্ধ নুসরাতের মৃত্যু হয়।

নিউজ২৪.ওয়েব/ডেস্ক/মৌ দাস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *